কৃষক
প্রায় ৪০% জনগণ কৃষিতে নিয়োজিত
প্রধান ফসল
ধান, পাট, চা, সবজি
মৎস্য চাষ
বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম মৎস্য উৎপাদক
খাদ্য উৎপাদন
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন
প্রায় ৪০% জনগণ কৃষিতে নিয়োজিত
ধান, পাট, চা, সবজি
বিশ্বে চতুর্থ বৃহত্তম মৎস্য উৎপাদক
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন
বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে জড়িত। কৃষি খাত দেশের জিডিপিতে প্রায় ১৪% অবদান রাখে এবং গ্রামীণ অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি।
উর্বর পলিমাটি, প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং উপযুক্ত জলবায়ুর কারণে বাংলাদেশ কৃষি উৎপাদনে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। দেশের প্রায় ৬০% ভূমি কৃষিকাজে ব্যবহৃত হয়।
ধান: বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফসল। দেশে বছরে তিনবার ধান চাষ হয় - আউশ, আমন এবং বোরো। বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ। বার্ষিক উৎপাদন প্রায় ৩.৬ কোটি মেট্রিক টন।
পাট: 'সোনালী আঁশ' নামে পরিচিত পাট বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী অর্থকরী ফসল। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাট উৎপাদনকারী দেশ। পাট থেকে তৈরি হয় বস্তা, দড়ি, কার্পেট এবং বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব পণ্য।
চা: সিলেট, মৌলভীবাজার এবং চট্টগ্রাম অঞ্চলে ব্যাপক চা চাষ হয়। বাংলাদেশে প্রায় ১৬৭টি চা বাগান রয়েছে। বার্ষিক চা উৎপাদন প্রায় ৯৬ মিলিয়ন কেজি। বাংলাদেশি চা বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত।
সবজি: বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সবজি উৎপাদনকারী দেশ। আলু, টমেটো, বেগুন, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়।
ফল: আম, কাঁঠাল, কলা, লিচু, পেঁপে, আনারস সহ বিভিন্ন ধরনের ফল উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশ বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম আম উৎপাদনকারী দেশ।
বাংলাদেশ মৎস্য চাষে বিশ্বে চতুর্থ স্থান অধিকার করেছে। অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়, পুকুর এবং উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক মৎস্য চাষ হয়। ইলিশ, রুই, কাতলা, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া প্রধান মাছ। চিংড়ি রপ্তানি থেকে বছরে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ডলার আয় হয়।
গবাদি পশু (গরু, ছাগল, ভেড়া), হাঁস-মুরগি পালন বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দুগ্ধ ও মাংস উৎপাদনে দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পোল্ট্রি শিল্প বছরে প্রায় ১৮০০ কোটি টাকার ব্যবসা।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI), বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (BRRI), এবং বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (BJRI) উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবনে কাজ করছে।
আধুনিক সেচ ব্যবস্থা, উন্নত বীজ, সার ব্যবস্থাপনা এবং কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের খাদ্যশস্য উৎপাদন চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশ এখন ধান উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ১৯৭১ সালে যেখানে খাদ্য ঘাটতি ছিল ১ কোটি টন, এখন উদ্বৃত্ত খাদ্য রপ্তানি করা হচ্ছে।
জলবায়ু পরিবর্তন, কৃষি জমি হ্রাস, লবণাক্ততা বৃদ্ধি প্রধান চ্যালেঞ্জ। তবে লবণসহিষ্ণু ও খরাসহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন, জৈব কৃষি, স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি এবং কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা হচ্ছে।